বুধবার, মার্চ ১৭, ২০১০

দ্রব্যমূল্য আয়ত্তে থাকবে তো?(যুগান্তর ২০ আগষ্ট ২০০৯)

মজান সামনে রেখে বাজার গরম। রমজানের এক মাস আগে মরিচের কেজি ২০০ টাকা ছিল। দাম কমানোর প্রতিশ্র“তি দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু বাস্তবতা শূন্য। মরিচের দাম অবশ্য কমেছে। কিন্তু অন্যান্য দ্রব্যÑ মাছ, মাংস, চিনি, সবজি, ছোলা, ডালের মূল্য এখনও আকাশছোঁয়াই বলা যায়।
বেড়েছে গ্যাসের দাম, বাড়বে বিদ্যুতের মূল্য। এসবের মধ্যেই কাটছে জীবন। প্রতিশ্র“তিবদ্ধ সরকারের সদিচ্ছা আর পদক্ষেপের মধ্যে মিল সেভাবে লক্ষণীয় নয়। বেশ কবার বৈঠক হয়েছে ব্যবসয়ীদের সঙ্গে। কিন্তু বাজার যেন মানতে চায় না কারও কথাই। পত্রিকান্তরে খবরÑ অল্প কয়েকজন আমদানিকারকের হাতে জিম্মি বাজার। সড়কপথে ও ফেরিতে পরিবহনকালে চাঁদাবাজি, বাজারে চাঁদাবাজি, ট্রাক ছিনতাই ইত্যাদি। এছাড়া আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের দাম কিছুটা বাড়তি।
এসবের পরও বাজারে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ার কারণ নেই। সরকার ও ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের বক্তব্যÑ চাহিদার তুলনায় বাজারে পণ্যসামগ্রীর সরবরাহ পর্যাপ্ত। এ পণ্য দিয়ে নাকি সহজেই আগামী দু’মাস চলা সম্ভব। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়লেও তার প্রভাব পড়তে দেরি লাগবে। এরপর প্রতিদিনই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে নানা পণ্যের দাম। তবে এ দাম বাড়ার হিড়িকটা খুচরা বাজারে বেশি। খুচরা ব্যবসায়ীরা তো আর মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন না। সিটি করপোরেশন ও বিভিন্ন বাজারে দ্রব্যমূল্যের তালিকা টাঙানো হলেও তার বাস্তবায়ন নেই। অথচ জনগণ অধিকাংশই খুচরা বাজারের গ্রাহক। খুচরা বাজারকে নিয়ন্ত্রণের জন্য সরকার ১০ আগস্ট থেকে বাজার মনিটরিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তার কার্যকারিতা কতটা পাব আমরা, জানি না। এখন পর্যন্ত নিত্যপণ্যের দাম কমার নাম-গন্ধ নেই। কোন পণ্যের দাম কিছুটা কমলেও তা অধিকাংশ মানুষের নাগালের বাইরে।
প্রস্তাবিত পে-কমিশন এখনও বাস্তবায়ন হয়নি, এরই মধ্যে বেড়ে গেছে জিনিসপত্রের দাম। পে-কমিশন বাস্তবায়ন হলে দাম বাড়বে আরেক দফা। অথচ পে-কমিশনে শুধু সরকারি চাকরিজীবীদেরই বেতন বাড়ে। আর তার দায় এসে পড়ে খেটে খাওয়া মানুষের ওপর।
মূলত এ চাপ থেকে মুক্তির জন্য বিশাল ম্যান্ডেট দিয়ে বর্তমান সরকারকে ক্ষমতায় এনেছে জনগণ। সরকার অবশ্য আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছে, চালিয়েছে। প্রথম থেকেই কমিয়েছে দ্রব্যমূল্য। অবশ্য সরকারের ভাগ্যও ছিল সুপ্রসন্ন। তখন আন্তর্জাতিক বাজারে দ্রব্যের দাম নিুমুখী ছিল। রমজান মাসকে কেন্দ্র করে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সচেষ্ট সরকার। কিন্তু কুলিয়ে উঠতে পারছে না। টিসিবি, ভিজিএফ কার্ড প্রদান, বাজার মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা হচ্ছে, ব্যবসায়ীদের সঙ্গেও বৈঠক হচ্ছে। এরপরও বাড়ছেই দ্রব্যমূল্য। আমরা জানি না, সরকার তাদের ওয়াদা কতটা রক্ষা করতে পারবে। রমজানে সাধারণ মানুষ ঠিকমতো খেয়ে-পরে রোজা পালন করতে পারবে তো?

কোন মন্তব্য নেই: