বুধবার, মার্চ ১৭, ২০১০

নষ্ট সময়ের শুদ্ধ কণ্ঠস্বর(যুগান্তর ১৯ আগষ্ট ২০০৯)

প্পান্ন বছর বয়স ছাপিয়ে উপছে পড়েনি। ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইল বইয়ের লেখকের। তিনি শুধু লেখকই ননÑ একাধারে কবি, ঔপন্যাসিক, ভাষাবিজ্ঞানী, সমালোচক এবং সমাজ সংস্কারকও বটে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে প্রথাবিরোধী এবং বহুমাত্রিকতা। যিনি বিশ্বাস করতেন সাহিত্য, জীবনের মতোই আপত্তিকর। সে হুমায়ুন আজাদ। স্বমহিমায় ভাস্বর। হুমায়ুন আজাদ। ১৯৪৭-এর ২৮ এপ্রিলে আসেন পৃথিবীতে। বিক্রমপুরের রাড়িখালে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. হুমায়ুন আজাদ। বাংলার সাহিত্যাকাশের অন্যতম নক্ষত্র। উজ্জ্বল এ নক্ষত্রটির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র থেমে থাকেনি। ২৭ ফেব্র“য়ারি ২০০৪-এ একুশে বইমেলা থেকে বাসায় ফেরার পথে আঁততায়ী সন্ত্রাসীদের আক্রমণের শিকার হন। জয়ী হন হুমায়ুন আজাদ। এ ঘটনার সাড়ে পাঁচ মাস অব্যবহিত পরেই জীবনাবসান হয় এ নক্ষত্রটির। ২০০৪-এর ১১ আগস্ট। জার্মানির মিউনিখ। রাত ১২টা। আকাশে জ্বল জ্বল তারকারা। ঘুমুতে গিয়েছেন হুমায়ুন আজাদ। জ্বল জ্বল তারকাগুলো হয়ে গেল নিষ্প্রভ। জানা গেল হুমায়ুন আজাদ নেই। আর নেই। চিরদিনের জন্য চলে গেলেন। এ মাসেরই ১২ আগস্ট।
তার মৃত্যুর পাঁচ বছর হল। তিনি সমাজের সংস্কার চেয়েছেন। সমালোচনা করতে ছাড়েননি কাউকে। ছাপ্পান্ন বছরের ছোট্ট জীবনে তিনি যেভাবে বলেছেন, যেভাবে লিখেছেন এবং যেভাবে সমালোচনা করেছেন এভাবে কেউ করেননি। ১৯৯২ সালে প্রকাশিত তার ‘নারী’ নিষিদ্ধ করা হয়। সবশেষ ‘পাকসার জমিন সাদ বাদ’ এর মাধ্যমে তিনি হামলার শিকার হন মৌলবাদীদের। সে ঘটনার পাঁচ বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পর আজও বিচার হয়নি তাদের। হুমায়ুন আজাদ সাম্প্রদায়িকতামুক্ত সমাজ চেয়েছেন। চেয়েছেন জীবন ও সাহিত্যকে একত্র করতে।
তিনি চলে গেছেন। রেখে গেছেন অসংখ্য স্মৃতি। তার বইয়ের মাধ্যমে তিনি বেঁচে থাকবেন চিরকাল।

কোন মন্তব্য নেই: